রেড ভেলভেট - রহস্যময়ী লাল কেক! | Le Delicia

রেড ভেলভেট – রহস্যময়ী লাল কেক!

রেড ভেলভেট কেক

কেক পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া সম্ভব না। বেকারি জগতের শীর্ষেই কেকের অবস্থান। এই কেকের মধ্যেও রয়েছে আবার হরেক রকমফের। আজ যদি তেমনই এক জনপ্রিয় কেকের কথা কেকের কাছেই শুনি তবে মন্দ হবে না নিশ্চয়ই।

ভূমিকা

আমার নামেই আভিজাত্য। আমি দেখতে যেমন নজরকাড়া ঠিক তেমনি সবার পছন্দের তালিকার শীর্ষে। আর আমাকে সেই শুরু থেকে অভিজাত ডেজার্ট পার্টিতে পরিবেশন করা হত। এইতো গতকাল সদ্য দুই বছরে পা রাখা আয়ানের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের মুল আকর্ষণ আমিই ছিলাম। বাচ্চাটাও আমাকে পেয়ে বড্ড খুশি ছিল। এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন আমি কে!

আমি আপনার প্রিয় ‘রেড ভেলভেট কেক’। আমি বিশ্বের অন্যতম প্রিয় ডেজার্ট এবং আমার গড়ে উঠার পেছনের আকর্ষণীয় ইতিহাস জানতে অনেকেই আগ্রহী। তাই আজ আমি বলবো ‘আমার আত্মকথা’।

আমাকে খুঁজে পেতে আপনাকে ফিরে যেতে হবে সেই ভিক্টোরিয়ান যুগে, ঠিক যে সময়ে আমার অস্তিত্বের শুরু হয়। আঠারো শতকের দিকে অভিজাত কেক তৈরিতে সাধারণত কোকো পাউডার ব্যবহার করা হত। কোকো উপাদানটি মুলত মোটা ময়দা ভাঙতে সহায়তা করে। ফলে কেকের মধ্যে একটা নরম ও ভেলভেটি টেক্সচার আসতো।

একটি সুস্বাদু চকলেট স্বাদের পাশাপাশি, ‘কোকো’ কেককে সুন্দর এবং নরম করে তোলে। উনিশ শতক থেকে কেকের মূল উপাদান হিসাবে কোকো ব্যবহার করা হয় । ফলে লোকেরা কোকো ভেলভেট কেক, লাল কোকো কেক এবং অন্যান্য “কোকো” জাতীয় কেকের রেসিপি নিয়ে কাজ শুরু করে।

আমার রঙ সাধারণত রেড–ব্রাউন ও লালচে কালারের হয়ে থাকে। আমি প্রধানত বাটার মিল্ক, মাখন, কোকো, ভিনেগার এবং ময়দা উপকরণগুলো দিয়ে তৈরী হই।

আর শুরুতে রঙের জন্য বিটরুট ব্যবহার করা হতো। বিটের লালচে রঙ কেককে আরও সুস্বাদু ও নরম করে তোলে।

যেহেতু আমি চকলেট ক্যাটাগরির কেক তাই কোকো পাউডার দিতেই হবে। আর যেহেতু কোকো পাউডার দেয়া হয়, তাই টকটকে লাল রং হবে না, কিছুটা রেড-ব্রাউন কালার আসবে। অথেনটিক রেড ভেলভেট-এ কোনো লাল রং ব্যবহার করা হত না। কোকো এবং অ্যাসিডের মধ্যে একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া কেকটিকে লালচে রঙ দেয়। প্রাকৃতিক কোকোতে প্রচুর অ্যাসিড থাকে এবং বেকিং সোডা আর বাটার মিল্কের সাথে তা মিশে এই রং তৈরি করে।

অবশেষে, ১৯৪৩ সালের দিকে, একটি জনপ্রিয় রান্নার বই, “The Joy of Cooking” এ আমার আত্মপ্রকাশ হয়। রান্নার বইয়ের লেখক Irma S Rombauer হাস্যকরভাবে বলেন, “She doesn’t care for the cake’।

যাই হোক, Irma অনুভব করেছেন যে আমাকে তৈরী করার রেসিপি গ্রাহকদের জানানো তার কর্তব্য। “The Joy of Cooking” রেসিপি বই ছিল জাতীয়ভাবে আমার প্রথম আবির্ভাব।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমার আবির্ভাব

এই ঘটনাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, যখন সৈন্য এবং বেসামরিক নাগরিকদের খাদ্য ও সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। চিনি এবং মাখনের মতো বেকিং এর পণ্যগুলোও রেশনের একটি অংশ ছিল। তখন কিছু বেকাররা তাদের কেকে নতুন কিছু আবিস্কারের জন্য বিটের রস ব্যবহার করেছিলেন।

আপনিও চাইলে এখন আমাকে খুঁজে পেতে পারেন যা বিটের রস দিয়ে তৈরী। বিটের লাল রঙ কেকের আরও সুস্বাদু তৈরি করে তোলে। এমনকি বিট শুধুমাত্র কেক সুন্দর করে তোলে না, তারা কেক নরমও করে তোলে।

বিটগুলি একটি ফিলার হিসাবে কাজ করে যা কেকটিকে শুকনো হওয়া থেকে বিরত রাখে। লোকেরা আমার মত লাল কেক কিনতে পেরে খুশি হয়েছিল কারণ আমাকে তাদের কাছে বিশেষ কিছু মনে হয়েছিল।

আপনি কি জানেন যে আমার বিভিন্ন নাম রয়েছে?

অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছে:

  • Red carpet cake
  • Red mystery cake
  • Flame cake
  • Authentic red velvet cake
  • Waldorf Astoria cake

Adams Extract company যখন কেক বিক্রি করছিল তখন তারা তাদের নিজস্ব নাম নিয়ে এসেছিল। তারা “The cake of a wife time”. ট্যাগলাইন ব্যবহার করে মজা করেছিল। হুহ্‌! খেয়ে মজার স্বাদ মিটে নাই, আমার নাম নিয়েও মজা করে!

আমাকে তৈরীর ক্রেডিট কার?

আমাকে আবিস্কারের কৃতিত্ব কে নিতে পারে সে সম্পর্কে অনেক ভিন্ন মতামত রয়েছে। Adams Extract Company দাবি করেছে যে তারাই আমাকে তৈরী করেছে। Adams Extract Company আমাকে তৈরিতে লাল রঙ ব্যবহার করে এবং বিক্রি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছিল।

আর এদিকে Waldorf Astoria Hotel বলেছে যে তারাই কৃতিত্ব পাবে। তাদের মতে তারাই হল আমার জন্মস্থান।

সত্যি বলতে এতজনের দাবি দেখে আমি নিজেও বিভ্রান্ত, আমাকে তৈরীর কৃতিত্ব কাকে দেবো? আপনি জানলে আমাকে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!

আমার এই ঐতিহাসিক লাল রঙ অভিজাত অনুষ্ঠানে অতিথিদেরকে প্রভাবিত করার জন্য চোখ ধাঁধানো এক টুকরাই যথেষ্ট। আজ, মানুষ তাদের মেন্যুতে আমাকে ডেজার্টের প্রথম সারিতে রাখতে অস্থির হয়ে যায়। আপনি আমাকে বিভিন্ন রূপে পাবেন যেমন রেড ভেলভেট কেক, পাই, কুকিজ, কাপকেক এবং এমনকি কিছু জায়গায় রেড ভেলভেট চিকেনও খুঁজে পেতে পারেন! হা হা!

এখন যদি আপনার ফ্রেশ এবং দারুণ স্বাদের রেড ভেলভেট কেক খেতে ইচ্ছে করে তাহলে দ্রুত অর্ডার করে ফেলুন লা ডেলিশিয়া থেকে। আমি নিজেই পৌঁছে যাবো আপনার ঘরে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

`
  • No products in the cart.