ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক: কিংবদন্তি জার্মান কেকের পেছনের গল্প! | Le Delicia

ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক: কিংবদন্তি জার্মান কেকের পেছনের গল্প!

black forest

আহ! একবার তাকালে নজর ফেরানো দায়। মুখে দেয়ার সাথে সাথেই চকোলেটের লেয়ারগুলো যেন উন্মুক্ত হয়ে যায়। সফট চকোলেটের আস্তরণের এর সাথে টক মিষ্টি চেরি ফিলিং আর তার সাথে ডার্ক চকোলেট ক্রাম্ব মিলে এক অসাধারণ স্বাদের সংমিশ্রণ যেন! বলছি, কেকের দুনিয়ায় বহু পুরনো নাম ‘ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক’ (Black Forest Cake) এর কথা।

‘ব্ল্যাক ফরেস্ট’ নামটার মধ্যেই ভীষণ ক্লাসি একটা ভাব আছে, তাই না? জাঁকজমকপূর্ণ এই ডেজার্টটি ”Black Forest Gateau” নামেও পরিচিত।

কেকের আসল নামটি কীভাবে হয়েছিল সে সম্পর্কে অনেক ধারণা রয়েছে।

এই ব্ল্যাক ফরেস্ট কেকের জন্মস্থান জার্মানে।  ধারনা করা হয় এই কেকটি সর্বপ্রথম ১৫০০ শতকে তৈরি করা হয় জার্মানের ব্ল্যাক ফরেস্ট অঞ্চলে। সেই সময়ে কেকে চকলেট এর ব্যবহার মাত্র শুরু হয়। এদিকে জার্মানির সে অঞ্চল  তখন টক চেরির জন্য বিখ্যাত ছিল। চেরি দিয়ে তৈরি এক ধরনের খাবার কির্শওয়াসার এই কেক এ ব্যবহার‌ করা হতো।

উৎপত্তি

এমন অনেকে রয়েছেন যারা দাবি করেন যে ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক তাদের দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছিল। কিছু বিখ্যাত দাবিগুলো জেনে নেয়া যাক।

ইতিহাসবিদ বলেছেন যে, কেকের নামটি ব্ল্যাক ফরেস্ট এলাকার মহিলাদের দ্বারা পরিধান করা ঐতিহ্যবাহী পোশাক থেকে অনুপ্রাণিত। পোশাকের উপরে বড় আকারের লাল পম-পোমসহ একটি বিশেষ টুপি রয়েছে। এই টুপিটিকে বোলেনহাট বলা হয়। জার্মান ভাষায়  বলা হয় Schwarzwälder Kirschtorte, যার মানে Black Forest Cherry Torte বা Gateau

অন্যদিকে জোসেফ কেলার (1887-1981) হলেন ব্ল্যাক ফরেস্ট চেরি কেকের উদ্ভাবক। কেলার ব্যাড গডেসবার্গের ক্যাফে “আহরেন্ড” এর পেস্ট্রি শেফ ছিলেন। ১৯১৫ সালে তিনি প্রথম কেকটি তৈরি করেছিলেন যাকে “Schwarzwälder Kirsch” বা “ব্ল্যাক ফরেস্ট চেরি” নাম দেন। জায়গাটি ব্ল্যাক ফরেস্টের প্রায় ৫০০ কিলোমিটার উত্তরে। এই দাবি অবশ্য কখনোই প্রমাণিত হয়নি।

সামরিক বাহিনী থেকে আসার পর জোসেফ কেলার রাডলফজেলে তার নিজস্ব ক্যাফে প্রতিষ্ঠা করেন। এদিকে আগস্ট শেফার ১৯২৪ থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত রাডলফজেলে জোসেফ কেলারের কাছে ছাত্র হিসাবে ব্যবসা শিখেছিলেন। বহু বছর পর জোসেফ কেলার আগস্ট শেফারকে তার রেসিপি বই দেন যেখানে তার আসল রেসিপি লেখা ছিল। পরবর্তীতে আগস্ট শেফারের ছেলে, ট্রাইবার্গ ক্যাফশেফারের বর্তমান কনডিটরমিস্টার ক্লজ শেফার উত্তরাধিকার সূত্রে বইটি পেয়েছিলেন। তার হাত ধরেই জোসেফ কেলারের আসল সূত্র উদ্ধার হয়। আসল রেসিপি এখন ক্লজ শেফারের কাছেই আছে।

ধীরে ধীরে এটি সারা বিশ্বে নামকরা ডেজার্ট হলেও এখন পৃথিবীর সবচেয়ে মজার ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক পাওয়া যায় ‌জার্মানিতেই।

ব্ল্যাক ফরেস্টের আসল রেসিপিতে দেখা যায়, চকলেট স্পঞ্জ কেকে চেরির ব্র‍্যান্ডি ব্রাশ করা হয়। তারপর টুকরো করে কাটা চেরি অথবা চেরি ফিলিং এবং হুইপ ক্রিম দিয়ে কেকটি সাজানো হয়। সবশেষে উপরে ডার্ক চকলেটের শেভিংস এবং চেরি দিয়ে ‘ফাইনাল লুক’ আনা হয়।

পরিশিষ্ট

সারাবিশ্বেই জনপ্রিয় কেক কিন্তু বাংলাদেশেও ভীষণ জনপ্রিয়। ব্ল্যাক ফরেস্টের অনুকরণে হোয়াইট চকলেট দিয়ে তৈরি হোয়াইট ফরেস্ট কেকের দেখাও মেলে এখন বিভিন্ন বেকারিতে। কিংবা দেখা যায় একই কেকে ব্ল্যাক ফরেস্ট আর হোয়াইট ফরেস্টের কম্বিনেশন। জনপ্রিয়তার জন্য এখন এই ব্ল্যাক ফরেস্টের ছোট পেস্ট্রিও সহজলভ্য বিভিন্ন বেকারি ও রেস্টুরেন্টেও। নাহ, আমার তো এখনি একবার ব্ল্যাক ফরেস্ট খেতে ইচ্ছে হচ্ছে। খাবেন না কি আপনিও? অর্ডার করে ফেলুন লা ডেলিশিয়ার ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

`
  • No products in the cart.